বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
বেগুন আমাদের কাছে একটি পরিচিত সবজি। বর্ষার দিনে বেগুন ভাজা আর ভাতের সাথে বেগুন ভর্তা বাঙ্গালি হিসেবে আমরা সবাই পছন্দ করি।তরকারি হিসেবেও বেগুনের খুবই প্রচলন রয়েছে।
বেগুন একটি উপকারী সবজি এতে রয়েছে নানা পুষ্টি ও ভিটামিন। বাংলাদেশ প্রচুর পরিমানে বেগুন চাষ হয়।বাংলাদেশের আবহাওয়া বেগুন চাষের জন্য উপযোগী। এটি একটি সহজলভ্য সবজি।
ভূমিকা
বেগুনের গুনাগুনের দিকে তাকালেই দেখা যায় বেগুন গুনে অনন্য। বেগুনে রয়েছে রোগপ্রতিরোধী উপাদান যা খেলে আমরা সুস্থ থাকি। বেগুনের নানা উপকারী দিক নিয়ে আজ আলোচনা করবে। আশা করি পুরো অনুচ্ছেদ টি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
বেগুনে কী কী পুষ্টি উপাদান রয়েছে?
তা নিচে তুলেধরা হলো:বেগুনে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফাইবার।এছাড়া ভিটামিন A,BওC রয়েছে প্রচুর পরিমানে।আয়রন,ফ্যাট,শর্করা,উদ্ভিদজ্জ প্রোটিন,ফাইটো-নিউট্রিন্ট, কম দ্রবনীয় কার্বোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম ও জিংক সমৃদ্ধ এই বেগুন অত্যন্ত উপকারি।
গর্ভাবস্থায় বেগুন খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা
বেগুনে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি,বি কম্লেক্স,এ রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমানে খনিজ যা ভ্রুণকে সুস্থ রাখে। বেগুন ভ্রুণের রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়।গর্ভাবস্থায় অনেকের ডায়বেটিস ধরা পরে, নানা কারণে তখন রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়।তখন যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেগুন রাখা যায় তহলে তা অত্যান্ত সাহায্য করে। এই সময় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে এছাড়া ও হজম ঠিকমতো হয় না।
বেগুনের মধ্যে ডায়েটারি ফাইবার থাকে যা হজমে সাহায্য করে গর্ভস্থ সন্তানকে সুস্থ রাখে। গর্ভাবস্থায় বেগুন খেলে হবু সন্তানের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।গর্ভাবস্থায় বেগুন উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত বেগুন খেলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া গর্ভবতী মা যদি কোন প্রকার এলার্জি জনিত সমস্যায় ভোগেন তহলে তার জন্য বেগুন খাওয়া খুব ক্ষতিকর হবে।
ওজন কমাতে বেগুন খাওয়ার গুরুত্ব
অধিক ওজন সম্পন্ন ব্যাক্তি তারা নিশ্চিন্তে খেতে পারে বেগুন। বেগুনে রয়েছে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের কোলেস্টেরল কমাতে ও নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে। পেটের মেদ জমতে দেয় না এই বিশেষ জাতের সবজি, তাই ডায়েট চাটে নিশ্চিন্তে রাখা যায় বেগুন। বেগুনে থাকা প্রাকৃতিক ফাইবার আমাদের বদহজম থেকে শরীরকে ভালো রাখে। বেগুনে রয়েছে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রণ যা শরীরকে কর্মঠ রাখে,হাড়ের গঠন মজবুত করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তই বলা যায় ওজন কমানোর জন্য বেগুন একটি উপকারী সবজি।
শরীর সুস্থ রাখতে বেগুনের প্রয়োজনীয়তা
হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে ফাইবার,ভিটামিন বি (বি১,বি৩ ও বি৬), সি ও কে আর এগুলোতে বেগুন পরিপূর্ণ। এতে ফাইট্রোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে যা হৃদপিণ্ডের জন্য অত্যান্ত উপকারী। হৃদপিণ্ডের জন্য অপরিহার্য উপাদান ফ্লাভোনয়েড যা বেগুনে বিদ্যমান। নিয়মিত বেগুন খেলে হৃদ রোগের ঝুকি অনেক অংশে কমে যায়।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেগুন উপকারী ।
উচ্চমাত্রার ফাইবার ও কম দ্রবনীয় কার্বোহাইড্রেড যা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে, নিয়মিত বেগুন খেলে এক সময় এটি ডায়বেটিস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি করে।সর্বদা মানসিক সাস্থ্য ঠিক রাখতে বেগুনের জুরি মেলাভার। বেগুনের ফাইট্রোনিউটিয়েন্স আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি ঘটায় এই বেগুন। বেগুন ভিটামিন এ,সি ও ই সমৃদ্ধ সবজি।
চোখের পুষ্টি যোগায়, চোখের জাবতীয় রেগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ভিটামিন-এ। ভিটামিন-সি ত্বক,চুল ও নখ মজবুত করে। রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না ও তার বিরুদ্ধে ভিটামিন ই ও কে বিশেষ কাজ করে,এই ভিটামিন শরীরের বিভিন্ন রেগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।বেগুনে থাকা আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং অ্যানিমিয়া বা রক্তশূণ্যতা হ্রাস করে।বেগুনের খোসায় রয়েছে এমন একধরনের উপাদান যা দেহের কোষ ভালো রাখে, কোষ অকালে মুরিয়ে যায় না অর্থাৎ বার্ধক্য বোঝা যায় না।
সুন্দর ও সুস্থ ত্বকের জন্য বেগুন গুরুত্বপূর্ণ। বেগুন খেলে কী এলার্জি হয়?
বেগুনে অনেক সময় মানব দেহে ক্ষতি করে থাকে যেমন বেগুন এলার্জির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কোন খাবারের গুনাগুন রোগ কে প্রতিরোধ করতে পারে কিন্তু যে রোগে ভুগছেন সে রোগের ক্ষেত্রে অনেক সময় ক্ষতির করন হয়ে দাড়ায়।বেগুন অনেকের গলদেশ ফুলিয়ে দেয়, বমিভাব, চুলকানি বা চামড়ার উপর ফুসকুড়ি সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এলার্জি আক্রান্ত মানুষের বেগুন পরিহার করা উচিত। যদিও বেগুনে প্রচুর পরিমানে জিংক রয়েছে তারপরেও এলার্জির কারন বেগুন।
সর্বোপরি বেগুন অত্যন্ত উপকারী সবজি।এটির অনেক রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে ও মানব দেহের জন্য প্রচুর উপকারী। তবে বেগুন খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, এলার্জি থাকলে বেগুন না খাওয়া উত্তম।
লেখকের মন্তব্য
বেগুনের অনেক গুন এ সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন এবং এর কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে যা আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি অনুচ্ছেদ টি আপনাদের ভালো লেগেছে, ভালো লাগলে কমেন্ট করবেন এবং বন্ধুদের সাথে সেয়ার করবেন।ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url